অপার সৌন্দর্যের অধিকারী ছাতক উপজেলার নাম করন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও জনশ্রুতি এবং বিভিন্ন দার্শনিকদের দেওয়া মতামত থেকে ছাতক উপজেলার নামকরনের ইতিহাসের মোটামুটি একটি তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
১। জনশ্রুতি আছেঃ চল ঘোড়া নাদামপুর, ছাতক বাজার কতদূর, আদিকাল থেকে ছাতক বাজারে সপ্তাহে একদিন হাট বসত,হাটে আসা বিক্রেতারা রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে বাঁশ,বেত ও পাত্তি দিয়ে ছাউনী দেওয়া বেশ বড় আকারের ছাতা ব্যবহার করে তাদের দোকান পাট চালাত, তখন সারা বাজার ছাতায় ছাতায় ভরে যেত, ছাতা টাঙ্গিয়ে বাজার বসত বলে একে ছাতির বাজার বা ছাতার বাজার নামে অভিহিত করা হত। এক পর্যায়ে উক্ত ছাতার বাজার ’’ছাতক বাজারে’’ পরিণত হয়।
২। আরেকটি বিশেষন থেকে জানা যায় হযরত শাহজালাল (র) এর আগমন কালে জনৈক দরবেশ এ এলাকায় ঘর দুয়ার তৈরি না করে ছাতা টাঙ্গিয়ে বসবাস শুরু করেন। তাঁর আগমনে এলাকায় ধর্মপ্রাণ ভক্ত অলি-দরবেশের আনাগোনা শুরু হয়। তাঁরা অনুরূপভাবে ছাতা টাঙ্গিয়ে বসবাস শুরু করেন এবং তা একটি হাঁটে রূপ নেয়। তাই ছাতার বাজার পরবর্তীতে ছাতক বাজারে রুপান্তরিত হয়েছে ।
৩। এ সম্পর্কে দার্শনিক জাতীয় অধ্যাপক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ছাতাকে কেন্দ্র করেই ছাতক নাম হয়েছে বলে ছোট বেলা থেকেই জেনেছেন।
৪। ইতিহাস বেত্তা গবেষক মনির উদ্দিন চৌধুরীর মতে ছত্রাক নামধারী একদল লোক এ এলাকা আবাদ করেন বলে পরবর্তীতে উক্ত ছত্রাক থেকে ছাতক হয়ে যায়। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, সামন্ত রাজাদের রাজ পরিষদে রাজার ছাতা ধারনকারীদেরকে ছত্রাক নামে সম্বোধন করা হত।
উপরোক্ত দিকগুলির ঐতিহাসিক বিশেষনে পাওয়া যায় ছাতক শব্দটি তিনটি শব্দের সমষ্টি। শব্দ তিনটি হল(ক) ছা=ছাতা (খ) ত=তকি (গ) ক=কলম অথাৎ ছাতক অঞ্চলে আগত দরবেশ ও ধর্ম প্রচারক এর সাথে ছাতা -তকি-কলম ছিল বলে ধারনা করা হয় এ তিন শব্দের আদ্যাক্ষর মিলে ছাতক হয়েছে।
প্রসঙ্গত উলেখ্য যে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জি পৃথিবীর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত প্রবন এলাকা , যা ছাতক উপজেলার খুব নিকটবর্তী হওয়ায় ছাতকে ও প্রচুর বৃষ্টিপাত হত। এজন্য এ এলাকার লোকজন নিরাপদে চলাচলের জন্য রোদ-বৃষ্টিতে ছাতা ব্যবহার করে বাজার-হাট করত। এ থেকে ও ছাতার বাজার বা ছাতক বাজার নামকরন হয়ে থাকতে পারে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস